ঢাকা , সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চৌদ্দগ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবা সহ চিহিৃত ৪ মাদক কারবারি আটক Logo চৌদ্দগ্রামে মৃত ভাইয়ের লাশ নিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলো আরও ২ ভাই Logo চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় নাগরিক আটক  Logo চৌদ্দগ্রামে খাল থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার Logo কুমিল্লা মুরাদনগরে এক পরিবারের ৩ জনকে হত্যা Logo চৌদ্দগ্রামে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও ফ্যাকো সেন্টারের উদ্বোধন Logo চৌদ্দগ্রামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা, রং মিস্ত্রি আটক Logo দেশব্যাপী জিরো টলারেন্স অভিযান: পুলিশের পেশাদারিত্বে ফিরছে জনআস্থা Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় উন্নত হবে শিক্ষার মান : চৌদ্দগ্রামে সেতু সচিব আব্দুর রউফ Logo চৌদ্দগ্রামে কালিকাপুর ইউনিয়ন ১ ও ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

দেশব্যাপী জিরো টলারেন্স অভিযান: পুলিশের পেশাদারিত্বে ফিরছে জনআস্থা

অপরাধ নির্মূলে আবারও দৃঢ় ও সমন্বিত অবস্থান নিল বাংলাদেশ পুলিশ। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশজুড়ে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে একদিনেই গ্রেফতার করা হয়েছে ১,৫৪০ জন অপরাধী। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১,০৭৪ জনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই দায়েরকৃত মামলা ও আদালতের ওয়ারেন্ট ছিল, আর বাকি ৪৬৬ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে।

 

এই অভিযান শুধু গ্রেফতারে সীমাবদ্ধ ছিল না। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও বিপজ্জনক সামগ্রী—যার মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, ছয় রাউন্ড গুলি, তিনটি ককটেল সদৃশ্য বস্তু এবং একটি বার্মিজ চাকু।

 

এই নিরবচ্ছিন্ন অভিযান জনসাধারণের মনে যেমন স্বস্তির ছাপ ফেলেছে, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও দায়বদ্ধতাও দৃশ্যমানভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “আমরা এখন প্রতিক্রিয়াশীল নই, বরং সক্রিয় গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পরিকল্পিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি।” তিনি বলেন, “সকল ইউনিট একযোগে মাঠে কাজ করছে—থানা থেকে শুরু করে বিশেষায়িত বাহিনী পর্যন্ত সবাই সমন্বিত ও পেশাদার মনোভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।”

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ এখন আর শুধু ছিনতাই বা দস্যুতা নয়; এটি ডিজিটাল প্রতারণা, সাইবার অপরাধ, মানব ও মাদক পাচারসহ জটিল রূপ ধারণ করেছে। এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের বর্তমান প্রক্রিয়াটি প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী। তারা আরও মনে করেন, পুলিশ যদি একইভাবে প্রতিটি অভিযানে তথ্যনির্ভরতা, দ্রুততা এবং আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা বজায় রাখে, তাহলে অপরাধের বিস্তার অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।

 

নাগরিক সমাজের মতে, এমন অভিযান তখনই টেকসই হবে, যখন জনগণও এর অংশ হয়ে উঠবে। সম্প্রতি অনেক জায়গায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ নিজেরাই অপরাধীদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছে পুলিশকে—যা পুলিশের ওপর বাড়তে থাকা আস্থারই প্রমাণ।

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “আগে পুলিশের দেখা মানেই ভয় লাগত। এখন তারা যখন নিয়মিত অভিযান চালায় এবং সঠিক অপরাধীদের ধরে, তখন মনে হয় কেউ আমাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে।”

এই অভিযান শুধুমাত্র একদিনের নয়—এটি একটি বার্তা। বার্তাটি হলো: অপরাধীরা আর নিরাপদ নয়, এবং সাধারণ মানুষ একা নয়। বাংলাদেশ পুলিশ এখন আরও শক্তিশালী, প্রযুক্তিনির্ভর ও জনবান্ধব।

পুলিশের ধারাবাহিক এই উদ্যোগ শুধু অপরাধ দমন নয়, বরং দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি নৈতিক অবস্থান—যেখানে প্রতিটি নাগরিক নিরাপদ, প্রতিটি অপরাধী চিহ্নিত এবং প্রতিটি দিন একটু বেশি শান্তিময়।

এমন উদ্যোগ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভিত মজবুত করে। পুলিশের পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠা যদি অব্যাহত থাকে, তবে শৃঙ্খলার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আর “ভয়” নয়, “ভরসা” বলেই জানবে এই দেশের মানুষ।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

চৌদ্দগ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবা সহ চিহিৃত ৪ মাদক কারবারি আটক

দেশব্যাপী জিরো টলারেন্স অভিযান: পুলিশের পেশাদারিত্বে ফিরছে জনআস্থা

আপডেট সময় ০১:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

অপরাধ নির্মূলে আবারও দৃঢ় ও সমন্বিত অবস্থান নিল বাংলাদেশ পুলিশ। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশজুড়ে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে একদিনেই গ্রেফতার করা হয়েছে ১,৫৪০ জন অপরাধী। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১,০৭৪ জনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই দায়েরকৃত মামলা ও আদালতের ওয়ারেন্ট ছিল, আর বাকি ৪৬৬ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে।

 

এই অভিযান শুধু গ্রেফতারে সীমাবদ্ধ ছিল না। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও বিপজ্জনক সামগ্রী—যার মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, ছয় রাউন্ড গুলি, তিনটি ককটেল সদৃশ্য বস্তু এবং একটি বার্মিজ চাকু।

 

এই নিরবচ্ছিন্ন অভিযান জনসাধারণের মনে যেমন স্বস্তির ছাপ ফেলেছে, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও দায়বদ্ধতাও দৃশ্যমানভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “আমরা এখন প্রতিক্রিয়াশীল নই, বরং সক্রিয় গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পরিকল্পিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি।” তিনি বলেন, “সকল ইউনিট একযোগে মাঠে কাজ করছে—থানা থেকে শুরু করে বিশেষায়িত বাহিনী পর্যন্ত সবাই সমন্বিত ও পেশাদার মনোভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।”

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ এখন আর শুধু ছিনতাই বা দস্যুতা নয়; এটি ডিজিটাল প্রতারণা, সাইবার অপরাধ, মানব ও মাদক পাচারসহ জটিল রূপ ধারণ করেছে। এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের বর্তমান প্রক্রিয়াটি প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী। তারা আরও মনে করেন, পুলিশ যদি একইভাবে প্রতিটি অভিযানে তথ্যনির্ভরতা, দ্রুততা এবং আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা বজায় রাখে, তাহলে অপরাধের বিস্তার অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।

 

নাগরিক সমাজের মতে, এমন অভিযান তখনই টেকসই হবে, যখন জনগণও এর অংশ হয়ে উঠবে। সম্প্রতি অনেক জায়গায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ নিজেরাই অপরাধীদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছে পুলিশকে—যা পুলিশের ওপর বাড়তে থাকা আস্থারই প্রমাণ।

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “আগে পুলিশের দেখা মানেই ভয় লাগত। এখন তারা যখন নিয়মিত অভিযান চালায় এবং সঠিক অপরাধীদের ধরে, তখন মনে হয় কেউ আমাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে।”

এই অভিযান শুধুমাত্র একদিনের নয়—এটি একটি বার্তা। বার্তাটি হলো: অপরাধীরা আর নিরাপদ নয়, এবং সাধারণ মানুষ একা নয়। বাংলাদেশ পুলিশ এখন আরও শক্তিশালী, প্রযুক্তিনির্ভর ও জনবান্ধব।

পুলিশের ধারাবাহিক এই উদ্যোগ শুধু অপরাধ দমন নয়, বরং দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি নৈতিক অবস্থান—যেখানে প্রতিটি নাগরিক নিরাপদ, প্রতিটি অপরাধী চিহ্নিত এবং প্রতিটি দিন একটু বেশি শান্তিময়।

এমন উদ্যোগ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভিত মজবুত করে। পুলিশের পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠা যদি অব্যাহত থাকে, তবে শৃঙ্খলার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আর “ভয়” নয়, “ভরসা” বলেই জানবে এই দেশের মানুষ।