মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার মাত্র ৫০০ গজ দূরে মহাসড়কের ফাল্গুনকরা মাজার এলাকায় আবারও এক প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। মালয়েশিয়া প্রবাসী বেলাল হোসেনের বহনকৃত প্রাইভেটকারে হামলা চালিয়ে ডাকাত দল সর্বস্ব লুটে নেয়।
শনিবার সকালে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফাল্গুনকরা মাজার এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে প্রবাসীর সব মালামাল, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রবাসীকে থানায় নিয়ে আসে এবং গাড়িচালক জাবেদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়।
প্রবাসী বেলাল হোসেন মালয়েশিয়া থেকে শুক্রবার রাত ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে রাত আড়াইটার দিকে (ঢাকা মেট্রো-ঘ-২৩-৭৭০২) নম্বরের একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে স্বজনদের নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার শরিফপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মহাসড়কের ফাল্গুনকরা এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে একটি ত্রিপল মোড়ানো পিকআপ ভ্যান পেছন থেকে এসে তাদের গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যেতে থাকলে চালক জোর চেষ্টা করে গাড়িটি সামলে নেন। কিন্তু এরপরই পিকআপ থেকে ৭-৮ জন ডাকাত দল নেমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রাইভেটকারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং গাড়ির যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে।
ডাকাত দল প্রবাসীর কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোন, ১ ভরি স্বর্ণ, ৩ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ৪টি মালামালের প্যাকেটসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়। এমনকি তার পাসপোর্টও ছিনিয়ে নেয়, যা তিনি অনেক অনুরোধের পর ডাকাতদের কাছ থেকে ফেরত পান।
বেলাল হোসেন বলেন,”তিন বছর পর অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরেছি, স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করব ভেবে। কিন্তু ডাকাতরা আমার সব কষ্টার্জিত সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এতো আশা নিয়ে দেশে ফিরেও এখন শূন্য হাতে দাঁড়িয়ে আছি।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) একই জায়গায় ডাকাত দল কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের গাড়িতেও হামলা চালিয়ে সব লুট করে নেয়। একই কায়দায় একদিন পর আবারও ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
কুমিল্লা রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশের সুপার খাইরুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন,
“প্রবাসীদের লক্ষ্য করে ডাকাতদের এমন হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছি, তদন্ত চলছে। ডাকাতদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
এ ঘটনায় প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং মহাসড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জনগণ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।