কুমিল্লার লাকসামে এক তরুণীকে (১৯) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার সোনাপুর এলাকার এক তরুণী ও তার স্বামী ১৩ মার্চ লাকসামে তার নানা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ১৪ মার্চ ভোরে লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সিএনজিতে ওঠেন তারা।
সিএনজি চালক মো. মাসুদ তাদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এবং কৌশলে লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে এবং পরিকল্পিতভাবে লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে তরুণীকে অপহরণ করে।
পুলিশ জানায়, পরে ভিকটিমকে লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীর পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। এরপর লাকসাম পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় অভিযুক্ত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে পুনরায় নির্যাতন চালানো হয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। পরে তার মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন—মোহাম্মদ আলী (২৫), লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে, মো. মাসুদ (২৩), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে, মনির হোসেন হৃদয় (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে, আল আমিন (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে, বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০), মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা জানান, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়। পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (১৭ মার্চ) তাদের আদালতে পাঠানো হবে। আমরা এ ঘটনায় কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’
পুলিশ আরও জানায়, মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং ভিকটিমের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। এ ঘটনায় লাকসাম এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।