ঢাকা , রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চৌদ্দগ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবা সহ চিহিৃত ৪ মাদক কারবারি আটক Logo চৌদ্দগ্রামে মৃত ভাইয়ের লাশ নিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলো আরও ২ ভাই Logo চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় নাগরিক আটক  Logo চৌদ্দগ্রামে খাল থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার Logo কুমিল্লা মুরাদনগরে এক পরিবারের ৩ জনকে হত্যা Logo চৌদ্দগ্রামে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও ফ্যাকো সেন্টারের উদ্বোধন Logo চৌদ্দগ্রামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা, রং মিস্ত্রি আটক Logo দেশব্যাপী জিরো টলারেন্স অভিযান: পুলিশের পেশাদারিত্বে ফিরছে জনআস্থা Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় উন্নত হবে শিক্ষার মান : চৌদ্দগ্রামে সেতু সচিব আব্দুর রউফ Logo চৌদ্দগ্রামে কালিকাপুর ইউনিয়ন ১ ও ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

বুধবার ‘মার্চ টু ঢাকা’, ৭ দফা দাবি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের

অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ এবং আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা। তারা জানান, বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই এই কর্মসূচি পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একীভূত চাকরিবিধি, চাকরি পুনর্বহাল ও হয়রানিমূলক বদলি বাতিলসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য এর আগেও সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় কিংবা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা এই কর্মসূচি ঘোষণায় বাধ্য হয়েছেন।

পবিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, যৌক্তিক সংস্কার দাবি করায় গত চার মাসে প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলি, বরখাস্ত, সংযুক্তি ও চাকরিচ্যুতির মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণ করা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগও তোলেন তারা।

তারা বলেন, নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে বিতরণ ব্যবস্থা তৈরি করে দায় চাপানো হচ্ছে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের ওপর। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণকারী কর্মীদের দায় এড়িয়েও হয়রানি করা হচ্ছে বেঁচে থাকা সহকর্মীদের।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের ৮০টি সমিতিতে চলা আন্দোলনের মধ্যেই গত অক্টোবরে গঠিত হয় বিদ্যুৎ সংস্কারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি। কিন্তু সাত মাসেও সেই কমিটির কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ পায়নি। একই সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ বিভাগ পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠিয়েছে, যা আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত আন্দোলনের কারণে ২৯ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত, অর্ধশতাধিক বরখাস্ত এবং কয়েক হাজারকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। বদলির তালিকায় আছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত, অসুস্থ এবং এমনকি মৃত কর্মীও।

মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত কর্মীদের নিয়োগপত্রে চাকরি বদলিযোগ্য নয় উল্লেখ থাকলেও তাদের নির্বিচারে বদলি করা হচ্ছে। দীর্ঘ ৩৬ বছর চুক্তিভিত্তিক কাজ করা সত্ত্বেও অনেকের চাকরি এখনো নিয়মিত হয়নি, যা কর্মীদের ‘চরম বৈষম্যের শিকার’ বলেও দাবি করা হয়।

গত জানুয়ারি ও এপ্রিল মাসে গণস্বাক্ষরসহ বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনো আলোচনা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাত দফা দাবি:

১. ফ্যাসিবাদী আচরণ ও দমন-পীড়নের দায়ে আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।

২. “এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি” বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ অথবা পুনর্গঠন।

৩. মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।

৪. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।

৫. লাইনক্রুসহ সকল হয়রানিমূলক বদলি ও বরখাস্ত আদেশ বাতিল।

৬. আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী শিফটিং ডিউটি চালুর জন্য জনবল সংকট নিরসন।

৭. পূর্ণ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের মাধ্যমে সমিতি পরিচালনা।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএম রাহাত হোসেন, ডিজিএম আলী হাসান, ডিজিএম আসাদুজ্জামান ভুঁইয়া, এজিএম আব্দুল হাকিম, এজিএম মনির হোসেন ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হাসানুজ্জামান।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

চৌদ্দগ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবা সহ চিহিৃত ৪ মাদক কারবারি আটক

বুধবার ‘মার্চ টু ঢাকা’, ৭ দফা দাবি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের

আপডেট সময় ০৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ এবং আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা। তারা জানান, বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই এই কর্মসূচি পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একীভূত চাকরিবিধি, চাকরি পুনর্বহাল ও হয়রানিমূলক বদলি বাতিলসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য এর আগেও সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় কিংবা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা এই কর্মসূচি ঘোষণায় বাধ্য হয়েছেন।

পবিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, যৌক্তিক সংস্কার দাবি করায় গত চার মাসে প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলি, বরখাস্ত, সংযুক্তি ও চাকরিচ্যুতির মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণ করা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগও তোলেন তারা।

তারা বলেন, নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে বিতরণ ব্যবস্থা তৈরি করে দায় চাপানো হচ্ছে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের ওপর। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণকারী কর্মীদের দায় এড়িয়েও হয়রানি করা হচ্ছে বেঁচে থাকা সহকর্মীদের।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের ৮০টি সমিতিতে চলা আন্দোলনের মধ্যেই গত অক্টোবরে গঠিত হয় বিদ্যুৎ সংস্কারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি। কিন্তু সাত মাসেও সেই কমিটির কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ পায়নি। একই সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ বিভাগ পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠিয়েছে, যা আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত আন্দোলনের কারণে ২৯ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত, অর্ধশতাধিক বরখাস্ত এবং কয়েক হাজারকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। বদলির তালিকায় আছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত, অসুস্থ এবং এমনকি মৃত কর্মীও।

মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত কর্মীদের নিয়োগপত্রে চাকরি বদলিযোগ্য নয় উল্লেখ থাকলেও তাদের নির্বিচারে বদলি করা হচ্ছে। দীর্ঘ ৩৬ বছর চুক্তিভিত্তিক কাজ করা সত্ত্বেও অনেকের চাকরি এখনো নিয়মিত হয়নি, যা কর্মীদের ‘চরম বৈষম্যের শিকার’ বলেও দাবি করা হয়।

গত জানুয়ারি ও এপ্রিল মাসে গণস্বাক্ষরসহ বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনো আলোচনা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাত দফা দাবি:

১. ফ্যাসিবাদী আচরণ ও দমন-পীড়নের দায়ে আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।

২. “এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি” বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ অথবা পুনর্গঠন।

৩. মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।

৪. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।

৫. লাইনক্রুসহ সকল হয়রানিমূলক বদলি ও বরখাস্ত আদেশ বাতিল।

৬. আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী শিফটিং ডিউটি চালুর জন্য জনবল সংকট নিরসন।

৭. পূর্ণ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের মাধ্যমে সমিতি পরিচালনা।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএম রাহাত হোসেন, ডিজিএম আলী হাসান, ডিজিএম আসাদুজ্জামান ভুঁইয়া, এজিএম আব্দুল হাকিম, এজিএম মনির হোসেন ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হাসানুজ্জামান।