কুমিল্লা নগরীর সুজানগর নবগ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় আহত হয়েছেন একাধিক স্থানীয় ছাত্র ও যুবক। তারা সমাজে মাদকের ভয়াবহতা রোধে মাদক ব্যবসায়ীদের এ কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানালে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর অর্তকিত হামলা চালায়। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই রাতেই কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় নবগ্রামের মোঃ সোহাগ মিয়া (৪০)সহ কয়েকজনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সোহাগ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক অস্ত্র ও মাদক মামলা থাকলেও তিনি প্রকাশ্যে এ অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সমাজ কমিটি ও যুব সমাজ বারবার মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য সোহাগ মিয়াকে অনুরোধ জানালেও তিনি তা উপেক্ষা করে আসছিলেন। অভিযোগে বলা হয়, বিগত সরকারদলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে গেছেন। বর্তমানে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তিনি অবৈধ ব্যবসার বিস্তার ঘটাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নবগ্রামের একদল যুবক ও ছাত্র মাদক ব্যবসা বন্ধের আহ্বান জানালে সোহাগ মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ কামরুল হাসান বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে নবগ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মিয়ার ছেলে মোঃ সোহাগ মিয়া (৪০), তার স্ত্রী মোসাঃ সুমি আক্তার (৩৫), সহযোগী পাথুরিয়া পাড়ার মোঃ আক্তার মিয়া (৪৫), বউবাজার এলাকার মোঃ সাইফুল (৩০), নবগ্রামের মোঃ রুবেল (৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সোহাগ মিয়া ভারত থেকে অবৈধভাবে মাদক এনে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেন। তার স্ত্রী সুমি আক্তার ও সহযোগীরা স্থানীয়ভাবে খুচরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করবেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, “অস্ত্রবাজি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিষয়ে আমরা কোনো ছাড় দেব না। অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা চান, মাদকের গডফাদারদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে যুব সমাজ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়।