কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপির উপজেলা ও পৌরসভা সাংগঠনিক সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চেয়ারে বসা ও ব্যানার-পোস্টার আগে নেওয়াকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়, এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন। তিনি বলেন, “জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই বিএনপির প্রাণ। গত ১৭ বছর তারা আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিল, ফলে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বিভক্ত করতে পারেনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভবিষ্যতেও সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. কামরুল হুদা। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জাহাঙ্গীর, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, মুজাহিদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বপন ও জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব হাজী মামুন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম রাজু ও পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ মজুমদার।
সভা চলাকালে চেয়ারে বসা ও ব্যানার-পোস্টার আগে নেওয়াকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন—জেলা বিএনপির সদস্য সাজেদুর রহমান মোল্লা হিরণ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম শামীম, পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান আশিক, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী জোবায়ের, যুবদল নেতা মো. সোলেমান, মো. খায়ের, উজ্জ্বল, শ্রমিকদল নেতা আবির, যুবদল কর্মী সবুজ, সাইফুল, মো. ইউসুফ, জনি, ইকবাল, আইয়ুব ও জাকির হোসেন।
আহতরা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সাজেদুর রহমান মোল্লা হিরণ অভিযোগ করে বলেন, “নেতাকর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে কামরুল হুদার কর্মীরা আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং আমাদের ওপর হামলা চালায়।”
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. কামরুল হুদা বলেন, “অডিটোরিয়ামের বাইরে নেতাকর্মীরা চেয়ারে বসা ও ব্যানার-পোস্টার আগে নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তবে সভাস্থলের ভেতরে কোনো সংঘর্ষ হয়নি।”
এদিকে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেন জুয়েল অভিযোগ করেন, “উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় কামরুল হুদা গ্রুপ অন্য ডেলিগেটদের প্রবেশ করতে দেয়নি এবং গেটে পাহারা বসায়। আমরা প্রবেশের চেষ্টা করলে তারা লাঠিসোঁটা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়, এতে আমাদের অন্তত ১৫ জন আহত হন।”
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপির সাংগঠনিক সভায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল বলে শুনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে।