ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কারাদণ্ডদুদকের মামলায় Logo ১৮ জন অতিরিক্ত পুলিশের আইজিকে বদলি Logo রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে প্রস্তুত: খলিলুর রহমান Logo চৌদ্দগ্রাম বিএনপির সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক রাশেদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ Logo উদয়ন সংগীত একাডেমীর পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন Logo চৌদ্দগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo ফরিদ আহমেদ শাহিন –সংগ্রামী জীবনের প্রতীক, প্রবাসেও যিনি লড়েছেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে Logo বিএনপি’র পৌরসভা দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী আমিনুল ইসলাম ছুটু Logo দোহা ভাই ,অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকা এক গুণী মানুষ Logo চৌদ্দগ্রামে ত্যাগী নেতা আবদুর রাজ্জাক রাশেদ: বিএনপির নির্ভরযোগ্য ভরসা

চৌদ্দগ্রামে রহস্যজনক ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের সহায়তা চায় পরিবার

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মো: তৈয়ব আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে নিহতের বসতঘরের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ। নিহত তৈয়ব আলী দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আমার ছেলে আবদুল করিম জনি পাশ্ববর্তী নোয়াপাড়া গ্রামের এরশাদ হোসেনের মেয়ে মাদরাসা ছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুুবনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুবনার মা মনোয়ারা বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ সময় তারা থানা পুলিশ ও কতিপয় বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে দ্রুত তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে না দিলে আমাদের হত্যা করার হুমকি সহ গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমার স্বামী তৈয়ব আলী মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েন। তিনি বাড়ির বাইরে বাগানে দীর্ঘসময় ধরে অবস্থান করেন। গতরাতেও লুবনার পরিবারের ভয়ে ঘরছাড়া হয়ে বাড়ির পাশের বাগানে ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে দিয়ে যায়। একটু পরে তিনি আবার বাহিরে চলে যান এবং আমিও ভয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে অন্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাই। বুধবার সকালে বাড়িতে গিয়ে আশেপাশে উনাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি বাড়ির পাশের একটি ছোট আমগাছের ডালের সাথে গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় আমার স্বামীর লাশ ঝুলে আছে। আমার চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের দু’টি পৃথক টিম এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আমরা এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

লুবনার মা মনোয়ারা বেগম জানান, তৈয়ব আলীর ছেলে জনি শনিবার সকালে আমার মেয়ে লুবনাকে নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আত্মীয়-স্বজন ও পুলিশ নিয়ে মেয়ের খোঁজে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তবে কাউকে হুমকি ধমকি দেয়নি।

রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, মেয়ের পক্ষের লোকজন পুলিশ নিয়ে তৈয়ব আলীর পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়। বারবার পুলিশি হয়রানিতে গত কয়েকদিন ধরে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আজ সকালে বাড়ির পাশের আম গাছে রহস্যজনকভাবে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে মূল রহস্য উম্মোচিত হোক।

মোহাম্মদ আলী নামের অপর এক ব্যক্তি জানান, গত পরশু মেয়ের চাচা সহ পুলিশ এসে তৈয়ব আলীর হাত ধরে টানাটানি করে। উত্তেজিত পুলিশ তাকে চড়-থাপ্পর দেয়। গ্রামবাসীর প্রতিবাদে দু’দিনের সময় দিয়ে তারা চলে যায়। আজ তার এভাবে রহস্যজনক মৃত্যুবরণ কেউ মেনে নিতে পারছে না। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তদন্ত করে বের করা উচিত।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তৈয়ব আলী নামের একজনের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে’।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কারাদণ্ডদুদকের মামলায়

চৌদ্দগ্রামে রহস্যজনক ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের সহায়তা চায় পরিবার

আপডেট সময় ০৩:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মো: তৈয়ব আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে নিহতের বসতঘরের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ। নিহত তৈয়ব আলী দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আমার ছেলে আবদুল করিম জনি পাশ্ববর্তী নোয়াপাড়া গ্রামের এরশাদ হোসেনের মেয়ে মাদরাসা ছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুুবনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুবনার মা মনোয়ারা বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ সময় তারা থানা পুলিশ ও কতিপয় বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে দ্রুত তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে না দিলে আমাদের হত্যা করার হুমকি সহ গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমার স্বামী তৈয়ব আলী মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েন। তিনি বাড়ির বাইরে বাগানে দীর্ঘসময় ধরে অবস্থান করেন। গতরাতেও লুবনার পরিবারের ভয়ে ঘরছাড়া হয়ে বাড়ির পাশের বাগানে ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে দিয়ে যায়। একটু পরে তিনি আবার বাহিরে চলে যান এবং আমিও ভয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে অন্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাই। বুধবার সকালে বাড়িতে গিয়ে আশেপাশে উনাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি বাড়ির পাশের একটি ছোট আমগাছের ডালের সাথে গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় আমার স্বামীর লাশ ঝুলে আছে। আমার চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের দু’টি পৃথক টিম এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আমরা এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

লুবনার মা মনোয়ারা বেগম জানান, তৈয়ব আলীর ছেলে জনি শনিবার সকালে আমার মেয়ে লুবনাকে নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আত্মীয়-স্বজন ও পুলিশ নিয়ে মেয়ের খোঁজে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তবে কাউকে হুমকি ধমকি দেয়নি।

রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, মেয়ের পক্ষের লোকজন পুলিশ নিয়ে তৈয়ব আলীর পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়। বারবার পুলিশি হয়রানিতে গত কয়েকদিন ধরে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আজ সকালে বাড়ির পাশের আম গাছে রহস্যজনকভাবে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে মূল রহস্য উম্মোচিত হোক।

মোহাম্মদ আলী নামের অপর এক ব্যক্তি জানান, গত পরশু মেয়ের চাচা সহ পুলিশ এসে তৈয়ব আলীর হাত ধরে টানাটানি করে। উত্তেজিত পুলিশ তাকে চড়-থাপ্পর দেয়। গ্রামবাসীর প্রতিবাদে দু’দিনের সময় দিয়ে তারা চলে যায়। আজ তার এভাবে রহস্যজনক মৃত্যুবরণ কেউ মেনে নিতে পারছে না। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তদন্ত করে বের করা উচিত।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তৈয়ব আলী নামের একজনের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে’।