ঢাকা , সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চৌদ্দগ্রাম বিএনপির সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক রাশেদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ Logo উদয়ন সংগীত একাডেমীর পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন Logo চৌদ্দগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo ফরিদ আহমেদ শাহিন –সংগ্রামী জীবনের প্রতীক, প্রবাসেও যিনি লড়েছেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে Logo বিএনপি’র পৌরসভা দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী আমিনুল ইসলাম ছুটু Logo দোহা ভাই ,অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকা এক গুণী মানুষ Logo চৌদ্দগ্রামে ত্যাগী নেতা আবদুর রাজ্জাক রাশেদ: বিএনপির নির্ভরযোগ্য ভরসা Logo গরিব দুঃখীর আপনজন, বিএনপি’র ফারুক ভাই: এক নিঃস্বার্থ সমাজসেবকের গল্প Logo চৌদ্দগ্রামে সাংবাদিক মামুনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া-মিলাদ অনুষ্ঠিত Logo চৌদ্দগ্রামে বিনাধান-১৯, ২১ ও ব্রি ধান-৪৮ এর মূল্যায়ন শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে দুর্ধর্ষ ডাকাতি: প্রবাসীর সর্বস্ব লুট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মুখোশধারী ডাকাত দল এক কুয়েতপ্রবাসীর বহনকারী মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী নাইমুল ইসলাম চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ থানার উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। বৃহস্পতিবার ভোরে চৌদ্দগ্রামের ফালগুনকরা মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম।

নাইমুল ইসলাম দীর্ঘ ১৯ মাস পর বুধবার রাতে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। রাত ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তিনি তার পরিবারসহ ভাড়া করা মাইক্রোবাস (চট্ট মেট্রো চ-১১-২৭৮৬) যোগে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

রাত ২টার পর তারা মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে এক হোটেলে যাত্রা বিরতি নেন। পুনরায় যাত্রা শুরু করে ভোর ৬টা ২০ মিনিটে চৌদ্দগ্রামের ফালগুনকরা মাজার এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি অজ্ঞাত পিকআপ ভ্যান মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।

গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানোর সঙ্গে সঙ্গেই পিকআপ ভ্যান থেকে ৮-১০ জন মুখোশধারী ডাকাত ধারালো অস্ত্র হাতে নেমে আসে। তারা মাইক্রোবাসের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলে এবং নাইমুল ইসলাম, তার বাবা আবুল খায়ের ও আত্মীয় নুরুল ইসলামকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়।

লুট হওয়া সম্পদের মধ্যে ছিল— প্রবাস থেকে আনা তিনটি কার্টুন, একটি হ্যান্ড লাগেজ, দুই ভরি স্বর্ণ, নগদ টাকা ও ২০০ কুয়েতি দিনার।

ডাকাতি শেষে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ঘটনার পরপরই আত্মীয় নুরুল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় নেয়।

নাইমুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের বলেন, “ডাকাতদের সংখ্যা ছিল ৮-১০ জন। সবার মুখ বাঁধা ছিল এবং হাতে ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা পরিকল্পিতভাবে পিকআপ ভ্যানে করে এসে আমাদের মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে থামিয়ে দেয়।”

মাইক্রোবাস চালক শাহাদাত হোসেন বলেন, “ডাকাতরা অতর্কিতভাবে আমাদের গাড়ির পাশে এসে ধাক্কা দেয়, এতে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ার উপক্রম হয়। এরপরই তারা হামলা চালিয়ে আমাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট করে।”

মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ জসিম উদ্দিন বলেন, “খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়। মহাসড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”

চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম বলেন, “ভুক্তভোগী নাইমুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে ডাকাত দলকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছি।”

থানা থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে এমন ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মহাসড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন ভুক্তভোগীরা।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চৌদ্দগ্রাম বিএনপির সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক রাশেদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে দুর্ধর্ষ ডাকাতি: প্রবাসীর সর্বস্ব লুট

আপডেট সময় ১০:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মুখোশধারী ডাকাত দল এক কুয়েতপ্রবাসীর বহনকারী মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী নাইমুল ইসলাম চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ থানার উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। বৃহস্পতিবার ভোরে চৌদ্দগ্রামের ফালগুনকরা মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম।

নাইমুল ইসলাম দীর্ঘ ১৯ মাস পর বুধবার রাতে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। রাত ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তিনি তার পরিবারসহ ভাড়া করা মাইক্রোবাস (চট্ট মেট্রো চ-১১-২৭৮৬) যোগে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

রাত ২টার পর তারা মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে এক হোটেলে যাত্রা বিরতি নেন। পুনরায় যাত্রা শুরু করে ভোর ৬টা ২০ মিনিটে চৌদ্দগ্রামের ফালগুনকরা মাজার এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি অজ্ঞাত পিকআপ ভ্যান মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।

গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানোর সঙ্গে সঙ্গেই পিকআপ ভ্যান থেকে ৮-১০ জন মুখোশধারী ডাকাত ধারালো অস্ত্র হাতে নেমে আসে। তারা মাইক্রোবাসের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলে এবং নাইমুল ইসলাম, তার বাবা আবুল খায়ের ও আত্মীয় নুরুল ইসলামকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়।

লুট হওয়া সম্পদের মধ্যে ছিল— প্রবাস থেকে আনা তিনটি কার্টুন, একটি হ্যান্ড লাগেজ, দুই ভরি স্বর্ণ, নগদ টাকা ও ২০০ কুয়েতি দিনার।

ডাকাতি শেষে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ঘটনার পরপরই আত্মীয় নুরুল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় নেয়।

নাইমুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের বলেন, “ডাকাতদের সংখ্যা ছিল ৮-১০ জন। সবার মুখ বাঁধা ছিল এবং হাতে ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা পরিকল্পিতভাবে পিকআপ ভ্যানে করে এসে আমাদের মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে থামিয়ে দেয়।”

মাইক্রোবাস চালক শাহাদাত হোসেন বলেন, “ডাকাতরা অতর্কিতভাবে আমাদের গাড়ির পাশে এসে ধাক্কা দেয়, এতে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ার উপক্রম হয়। এরপরই তারা হামলা চালিয়ে আমাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট করে।”

মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ জসিম উদ্দিন বলেন, “খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়। মহাসড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”

চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম বলেন, “ভুক্তভোগী নাইমুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে ডাকাত দলকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছি।”

থানা থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে এমন ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মহাসড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন ভুক্তভোগীরা।