ঢাকা , সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চৌদ্দগ্রাম বিএনপির সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক রাশেদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ Logo উদয়ন সংগীত একাডেমীর পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন Logo চৌদ্দগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo ফরিদ আহমেদ শাহিন –সংগ্রামী জীবনের প্রতীক, প্রবাসেও যিনি লড়েছেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে Logo বিএনপি’র পৌরসভা দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী আমিনুল ইসলাম ছুটু Logo দোহা ভাই ,অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকা এক গুণী মানুষ Logo চৌদ্দগ্রামে ত্যাগী নেতা আবদুর রাজ্জাক রাশেদ: বিএনপির নির্ভরযোগ্য ভরসা Logo গরিব দুঃখীর আপনজন, বিএনপি’র ফারুক ভাই: এক নিঃস্বার্থ সমাজসেবকের গল্প Logo চৌদ্দগ্রামে সাংবাদিক মামুনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া-মিলাদ অনুষ্ঠিত Logo চৌদ্দগ্রামে বিনাধান-১৯, ২১ ও ব্রি ধান-৪৮ এর মূল্যায়ন শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত

নারী দিবস ও নারীর নিরাপত্তা: প্রাসঙ্গিকতা ও বাস্তবতা

আজ ৮ই মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতি বছর এই দিনটি নারী অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়নের বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু বাস্তবতা আমাদেরকে কতটা সেই সমতার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পেরেছে? যখন একজন আট বছরের শিশু পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় এবং মৃত্যুর সাথে লড়াই করে, তখন নারী দিবসের তাৎপর্য নতুন করে ভাবিয়ে তোলে।

নারী দিবসের মূল উদ্দেশ্য নারীদের প্রতি সম্মান ও সমতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সরকার এই দিনে নানান প্রতিশ্রুতি দেয়, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করে, কিন্তু বাস্তবে নারীরা কতটা নিরাপদ?

বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়ন ও অধিকার নিয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা থামেনি। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ—এসব অপরাধ আজও আমাদের সমাজে ঘটে চলেছে।

বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব শাস্তি কতটা কার্যকর হচ্ছে? অনেক সময় অপরাধীরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যায়, বিচার দীর্ঘায়িত হয়, ভুক্তভোগী ও তার পরিবার হুমকির মুখে পড়ে। ফলে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।

একটি কঠোর শাস্তির বাস্তবায়ন অপরাধ কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে। একজন ধর্ষক যদি জানে তার অপরাধের পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড, তবে সে হয়তো দ্বিতীয়বার ভাববে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছি, যেখানে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যায়।

অপরাধ কমাতে করা দরকার-

১. শিক্ষাব্যবস্থায় আইন শিক্ষার সংযোজন – প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের দেশের মৌলিক আইন সম্পর্কে সচেতন করা উচিত।

২. দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি – দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পায় না। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি – নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে।

৪. আইনের কঠোর প্রয়োগ – কোনো অপরাধী যেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

নারী দিবস শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ফটোসেশন বা একদিনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তার কোনো মূল্য নেই। প্রকৃতপক্ষে, নারী দিবস তখনই সফল হবে যখন প্রতিটি নারী নির্ভয়ে পথ চলতে পারবে, প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, এবং অপরাধীরা শাস্তি পাবে।

আজকের দিনটি হোক প্রতিশ্রুতির দিন—শুধু কথায় নয়, কাজে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধুমাত্র সম্মান জানানো নয়, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাই হোক আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চৌদ্দগ্রাম বিএনপির সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক রাশেদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ

নারী দিবস ও নারীর নিরাপত্তা: প্রাসঙ্গিকতা ও বাস্তবতা

আপডেট সময় ০২:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

আজ ৮ই মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতি বছর এই দিনটি নারী অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়নের বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু বাস্তবতা আমাদেরকে কতটা সেই সমতার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পেরেছে? যখন একজন আট বছরের শিশু পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় এবং মৃত্যুর সাথে লড়াই করে, তখন নারী দিবসের তাৎপর্য নতুন করে ভাবিয়ে তোলে।

নারী দিবসের মূল উদ্দেশ্য নারীদের প্রতি সম্মান ও সমতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সরকার এই দিনে নানান প্রতিশ্রুতি দেয়, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করে, কিন্তু বাস্তবে নারীরা কতটা নিরাপদ?

বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়ন ও অধিকার নিয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা থামেনি। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ—এসব অপরাধ আজও আমাদের সমাজে ঘটে চলেছে।

বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব শাস্তি কতটা কার্যকর হচ্ছে? অনেক সময় অপরাধীরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যায়, বিচার দীর্ঘায়িত হয়, ভুক্তভোগী ও তার পরিবার হুমকির মুখে পড়ে। ফলে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।

একটি কঠোর শাস্তির বাস্তবায়ন অপরাধ কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে। একজন ধর্ষক যদি জানে তার অপরাধের পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড, তবে সে হয়তো দ্বিতীয়বার ভাববে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছি, যেখানে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যায়।

অপরাধ কমাতে করা দরকার-

১. শিক্ষাব্যবস্থায় আইন শিক্ষার সংযোজন – প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের দেশের মৌলিক আইন সম্পর্কে সচেতন করা উচিত।

২. দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি – দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পায় না। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি – নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে।

৪. আইনের কঠোর প্রয়োগ – কোনো অপরাধী যেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

নারী দিবস শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ফটোসেশন বা একদিনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তার কোনো মূল্য নেই। প্রকৃতপক্ষে, নারী দিবস তখনই সফল হবে যখন প্রতিটি নারী নির্ভয়ে পথ চলতে পারবে, প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, এবং অপরাধীরা শাস্তি পাবে।

আজকের দিনটি হোক প্রতিশ্রুতির দিন—শুধু কথায় নয়, কাজে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধুমাত্র সম্মান জানানো নয়, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাই হোক আমাদের প্রধান লক্ষ্য।